সেন্টার ফর এথিক্স এডুকেশন (সিইই)-এর উদ্যোগে ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ঢাকার পল্লবীতে আহ্ছানিয়া মিশন ভকেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে, মিশনভুক্ত ভোকেশনাল অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলোর প্রশিক্ষক, কর্মকর্তাদের নিয়ে দিন ব্যাপী নৈতিক শিক্ষা বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মিশনভুক্ত চারটি ভিটিআই এর পঁচিশজন অংশগ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয় একটি উদ্বোধনী আয়োজনের মাধ্যমে। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ড. এস এম খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে আলোচনা করেন আহ্ছানিয়া মিশন কলেজের প্রিন্সিপাল শেখ সাঈদ আলী। সিইই-এর পক্ষ্যে স্বাগত বক্তব্য দেন আনিসুল কবির জাসির এবং ভিটিআই-এর পক্ষ্যে বক্তব্য দেন ভিটিআই পল্লবী শাখার ম্যানেজার এস এম জেড মোস্তাজেব আলী। আরো আলোচনা করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে সিইই-এর পরিচালক প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিইই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আলী রেজা। এই পর্বে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া পরামর্শক এবং প্রশিক্ষক চিন্ময় মুৎসুদ্দি ও আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি’র প্রিন্সিপাল কাজী শহিদুল ইসলাম।
দ্বিতীয় পর্বে চিন্ময় মুৎসুদ্দি নৈতিকতার প্রাথমিক ধারণা বিষয়ে এবং আইন ও নৈতিকতা এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। তিনি গল্প এবং খেলার মাধ্যমে আইন কী এবং সমাজে এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি অংশহণকারীদের বোঝান। জনাব রহমান তাঁর সেশনে আইন এবং এর সঠিক প্রয়োগ না থাকলে সমাজে বিশৃংখলা তৈরি হয় তা খেলার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের বোঝাবার চেষ্টা করেন।
বিরতির পর পুনরায় প্রশিক্ষণ সেশন শুরু হয় সিইই-এর সিইও এর সিইই বিষয়ক একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে। এই উপস্থাপনায় জনাব রেজা সিইই-এর শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি এবং কার্যক্রমটির বিস্তারিত তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি সমাজের নানা অসংগতির অন্যতম কারণ মানুষের নৈতিক স্খলন বলে মন্তব্য করেন। নৈতিক বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, নৈতিকতা বিষয়টি মূলত সামাজিক আর মোরালিটি হলো মানুষের ব্যক্তিগত সততা, নিষ্ঠা, ন্যায়পরায়নতা ইত্যাদি। ফলে
সমাজে শুধু মোরালিটি সম্পন্ন মানুষ দিয়ে শান্তি ও সমৃদ্ধি হবে না যতক্ষণ না নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন মানুষ তৈরি হবে।
জীবিকার লক্ষ্য কী কখনো জীবনের লক্ষ্য হতে পারে? এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনা করেন সিইই-এর প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী মো. সাইফুজ্জামান রানা। তিনি তাঁর সেশনে অংশগ্রহণকারীদের বোঝাবার চেষ্টা করেন যে জীবিকার লক্ষের থেকে জীবনের লক্ষ্য অনেক বড় এবং মহৎ। ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জীবিকার জন্য প্রস্তুত করার পাশাপাশি জীবনের লক্ষ্য বিষয়ে ধারণা দিতে হবে। তিনি তাঁর অপর একটি উপস্থাপনায় সমাজের নানা অসংগতির পিছনে যে ব্যক্তির দায় রয়েছে সে বিষয়টি তুলে ধরেন এবং সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ব্যক্তি ও সমাজের ভালোর জন্য কাজ করার প্রতি জোর দেন। দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণের শেষ অংশে নৈতিকতা বিষয়ক এই ধরণের প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং আমাদের করণীয় বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয়। সবশেষে আআইআইসিটি’র প্রিন্সিপাল কাজী শহিদুল ইসলাম সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।